
চাহিদার চোরাবালিতে নীতিহীন সমাজ
চাহিদার চোরাবালিতে নীতিহীন সমাজ
কোনো এক সময়, আমাদের সমাজের মূল ভিত্তি ছিলো নীতি, মূল্যবোধ, এবং পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। পরিবারে শিশুরা শিখতো সত্য বলার মূল্য, স্কুলে শিখতো ন্যায়ের পথ অনুসরণ করা, আর সমাজে বড়রা বলতো—”অন্যায়কে না বলো”। কিন্তু সময়ের পালাবদলে, সেই দৃঢ় নৈতিক ভিত্তি যেন ভেঙে পড়েছে। এখন মানুষ যা চায়, তা চায় যেকোনো মূল্যে—সেটি হোক পদ, অর্থ, প্রতিপত্তি, অথবা খ্যাতি।
এই চাহিদা প্রথমে আসে স্বাভাবিকভাবে। একটু ভালো থাকা, একটু আরাম চাওয়া, একটু সম্মান পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু এই চাওয়াটা যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তখনই জন্ম নেয় লোভ। আর লোভ এমন এক আগুন, যা শুধু জ্বালায়—কখনো তৃপ্ত হয় না। এই আগুনে পুড়ে ছারখার হয়েছে আমাদের সততা, হারিয়েছে আমাদের মানবতা।
এক সময় মানুষ বিপদে পড়লে প্রতিবেশী এগিয়ে আসতো, এখন সেই প্রতিবেশীই সুযোগ খোঁজে দুর্বলতার। এক সময় শিক্ষক ছিলেন আদর্শের প্রতীক, এখন কেউ কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারিগর। কর্মজীবী মানুষ চাকরির স্থায়িত্বের চেয়ে ঘুষের সহজ রাস্তা বেছে নিচ্ছে। তরুণরা আদর্শের পেছনে না ছুটে ছুটছে চটকদার স্বপ্নের পিছনে, যেখানে নীতি নয়, কৌশলই বড়।

চাহিদার চোরাবালিতে নীতিহীন সমাজ
অতিরিক্ত চাহিদা আমাদের অন্ধ করে দিয়েছে। কেউ আর জিজ্ঞেস করে না—”কিভাবে অর্জন করেছো?” বরং জিজ্ঞেস করে-“কত টাকায় পৌঁছেছো?” মূল্যবোধ এখন এক ফেলে আসা ইতিহাসের নাম। সমাজে সফলতা এখন পরিমাপ হয় গাড়ির ব্র্যান্ডে, ফোনের মডেলে, আর ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ারে।
এভাবেই এক সময়ের মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ আজ দাঁড়িয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতার সামনে, যেখানে নীতি-আচরণ শুধু মুখে বলা কথামাত্র, কাজের সময় এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
চাহিদার চোরাবালিতে নীতিহীন সমাজ.. আর্টিকেল নিয়ে আপনার যে কোন ধরনের মন্তব্য করুন। আপনাদের একটি মন্তব্য করা মানেই আপনি আমার আর্টিকেলটি পড়েছেন। আমরা লিখি সকলের জন্য। দেশ, জাতি, সমাজ, সংসার নিয়ে। আর তা যদি আপনারা শুধুই ফেসবুকের মতো স্ক্রোল করে যান তাহলে কি হবে আমাদের এই কষ্ট করে ব্লগিং করা। এই স্ক্রোল হয়তো এক সময় হারাবে চিন্তিত সকল লেখকদের।
বিজ্ঞাপণ
