একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ, গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন উপকারেই আসলোনা আজকের এই ক্রান্তিলগ্নে, এই বাংলাদেশ আর্মি নামক টিকটক পার্টির।
বিভিন্ন দেশের আনাচে কানাচে থেকে লোকাল ফুড রিভিউ, কংগোর স্ট্রিট সাইডে পাঙ্গাস মাছের দাম কত,লইট্ট্যা মাছের দাম কত,কাকে কাকে বাংলা ভাষা শিখিয়েছে,জাতীয় সঙ্গীত শিখিয়েছে,টিকটকে নাচ গান,হ্যালো গাইজ ভিডিও ভ্লগিং। এইভাবেই চলছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ প্রশাসনিক বাহিনী আমাদের গৌরবের বাংলাদেশ আর্মি।
গত ষোলো বছরে এই আর্মিদের অবদান কি এই রাষ্ট্রের জন্য? এই জাতির জন্য? এই জনগনের জন্য? কিছুইনা,নাথিং!
শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তবতা। শান্তি মিশন থেকে মোটা অংকের অর্থের লোভে আর্মিতে জয়েন করা,উচ্চ বেতন রাষ্ট্র থেকে নেওয়া,রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনের মধ্যে রাতের ব্যালট বক্স পাহারা দেওয়া,দিনের বেলায় ছাত্রলীগকে ভোটকেন্দ্রে সহায়তা করা,ডেইলি হিসেবে বেতন। রাষ্ট্রের ক্লান্তিলগ্নে যখন এদেরকে এই দেশের ছাত্রসমাজের প্রয়োজন,সাধারণ মানুষের প্রয়োজন,রাষ্ট্রের প্রয়োজন,এই লাল সবুজ পাতাকার প্রয়োজন তখনই চুপ থাকার জন্য ও টাকা খাওয়া,শুধু টাকা খাওয়া নয়,এই রাষ্ট্রের গনতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি করে স্বৈরাচার কে পাহারা দেয়া ছাড়া এদের আর কাজ টা কি?
পিলখানাতে নাকি দেশপ্রেমিক আর্মিদের মেরে ফেলা হয়,এই এত এত বছরে কি আর্মিতে একটা দেশপ্রেমিক,ন্যায়ের জন্য,দেশের জন্য,ছাত্রসমাজের জন্য ঘুরে দাড়ানোর মত কোন সিপাহি ও নাই??? লজ্জা আসলে আমাদেরই!
আকাশ পথে জ্বালানি খরচ করে রাষ্ট্রের আকাশে আতংক সৃষ্টি করা এই কথিত মহান আর্মিরা এই রাষ্ট্রের মানুষের বেতনের টাকায় চলে,শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দেন না,ইন্ডিয়া থেকেও এনে দেন না। এই যে সরকারি কোয়ার্টারগুলোতে থাকেন,এই যে এত এত উচ্চবিলাসি জীবন ব্যবস্থা আপনাদের পরিবারের,আপনাদের সন্তানদের,আপনাদের সন্তানরা বিদেশে পড়ে,কোন কাজ করেনা,ভেবেছেন আমরা জানিনা বিদেশের পড়ালেখার খরচ কেমন? এইগুলা আসে কোথা থেকে? আপনারা তো দূর্নীতি ও করেন না তাইনা,আপনাদের বেতন ও তো কারো ৫ লক্ষ টাকার বেশি হওয়ার কথা না(ধরেই নিলাম)
অথচ রাষ্ট্রের এই সময়ে এসেও আপনাদের সামনে পুলিশ,র্যাব ও ছাত্রলীগ মানুষের বাসায় বাসায়,বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গণ গ্রেপ্তার চালাচ্ছে,অথচ রাষ্ট্রে কারফিউ চলাকালীন কোন মানুষ নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হলে সেই দায়ভার সেনাবাহিনীরই। অথচ এই কথিত দেশপ্রেমিক বাহিনী আজকে পুলিশ ছাত্রলীগ আর র্যাবের গোলামের পরিণত হয়েছে। স্বৈরাচারের গদি পাহারা দেয়ার জন্য এরা আজকে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরা এই বিবেক,এই রক্ত,এই মস্তিষ্ক নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কিভাবে ঘুমাতে যান? সন্তানদের কিভাবে বুকে টেনে নেন? এরা কি সন্তানহীন? বাবা মা হীন? স্ত্রী হীন?
এই জাতির সাথে,স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে,লাল সবুজের পতাকার সাথে এই উর্বর তারুণ্যের সাথে,এই মেধাবীদের লাশের সাথে,পরিবর্তনের লাশের সঙ্গে,লাল সবুজের কফিনের সঙ্গে যে বেঈমানী টা করতেছেন না এইসব ও একদিন ফিরে আসবে এভাবেই কোন যুবকের বক্ষ বিদ্ধ গুলির আওয়াজে।
রচনাকাল : জুলাই 26, 2024