সালাতুল হাজতের নিয়ম : সালাতুল হাজত নামাজ হচ্ছে হাজত বা মনের বাসনা বা ইচ্ছে পুরনের উদ্দেশ্যে যে নামায আদায় করা হয়। সালাতুল হাজত একটি সাধারন নফল সালাত বা নফল ইবাদাত। বান্দা তার গুনাহ মাফের জন্য, বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা শারীরিক সুস্থতা, মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে এ নামাজ পড়তে হয়।
সালাতুল হাজত নামাজের উপযুক্ত সময় : মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম হতে বর্ণিত যে, মুসলিম নর-নারী বিশেষ প্রয়োজেন এবং যে কেনো বিপদ মুক্তির জন্য রাত্রের শেষভাগে নিদ্রা হতে জাগ্রত হয়ে পাক পবিত্র হয়ে, ইয়াকিনের সাথে কয়েকবার দুরুদ শরীফ ও এস্তেগফার পাঠ করে চার রাকাত নফল ‘সালাতুল হাজত’ নামাজ শেষে আল্লাহর নিকট খালেছ দিলে অনুনয়-বিনয়ের সাথে স্বীয় উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রার্থনা করবেন। আল্লাহর অসীম রহমেত তার দোয়া কবল হবে ইনশা আল্লাহ্।
সালাতুল হাজতের ধারাবাহিক বর্ননা :
আরবী নিয়তঃ
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى رَكْعَتِ صَلَوةِ الْنَفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ-
নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই ছালাতিল হাজাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
বাংলা নিয়তঃ আমি ছালাতিল হাজতের চার রাকাত নফল নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।
এরপর আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, সানা এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করে-
لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ – فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ-
লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জো’য়ালিমীন। ফাজ্তাজাবনা লাহু ওয়া নাজ্জাইনাহু মিনাল গাম্মি, ওয়া কাজালিকা নুনজিল মু’মিনিন এই আয়াত ১০০ বার পাঠ করবেন।
এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।
দ্বিতীয় রাকাত:
সূরা ফাতিহার পর رَبَّي أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ – রাব্বি আন্নি মাস্সানিয়ায যুররো ওয়া আনতা আরহামার রাহিমীন ১00 বার পাঠ করবেন।
এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।
তৃতীয় রাকাত:
তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ওয়া উফায়য়িজুি আমরি ইলা আল্লাহ, ইন্নাললাহা বাসিরুম বিল ইবাদ ১০০ বার পাঠ করবেন।
এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবে।
চতুর্থ রাকাত:
চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيْرُ হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’ ১০০ বার পাঠ করবেন।
এবং রুকু সিজদা করে বসবেন।
যথারীতি তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা ইত্যাদি পাঠ করে ছালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবেন।
নামায শেষে সিজদায় গিয়ে رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِر রব্বি আন্নি মাগলুবুন ফানতাসির ১০০ বার পাঠ করবেন এরপর সিজদা হতে উঠে আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়ে মোনাজাত করবেন। আল্লাহর অসীম রহমেত তার দোয়া কুবল হবে ইনশা আল্লাহ্।
সালাতুল হাজতের নিয়ম
সালাতুল হাজত নামাজের আয়াত সমুহের বাংলা উচ্চারনসহ অর্থ:
لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ – فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ-
উচ্চারন : (লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জো’য়ালিমীন। ফাজ্তাজাবনা লাহু ওয়া নাজ্জাইনাহু মিনাল গাম্মি, ওয়া কাজালিকা নুনজিল মু’মিনিন)
অর্থ : তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তুমি দোষমুক্ত, নিশ্চয় আমি গোনাহগার। অতঃপর আমি তার আহ্বানে সাড়া দিলাম। এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে মুমিনদের মুক্তি দিয়ে থাকি’’
رَبَّي أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ –
উচ্চারন : (রাব্বি আন্নি মাস্সানিয়ায যুররো ওয়া আনতা আরহামার রাহিমীন)
অর্থ: হে আমার প্রভু! আমি দুঃখে কষ্টে পতিত হয়েছি, তুমিইতো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।
ওয়া উফায়য়িজুি আমরি ইলা আল্লাহ, ইন্নাললাহা বাসিরুম বিল ইবাদ
حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيْرُ
উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’
অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক; আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।অংশের মিলিত রূপ।
رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِر
উচ্চারণ: রব্বি আন্নি মাগলুবুন ফানতাসির।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তো অসহায়। অতএব তুমি আমাকে সাহায্য করো।