জীবনকে উপভোগ করার নাম সংসার! যুগ যুগ একই ছাদের নিচে থেকেও, অনেক সময় একজন অন্যজনের ভালোবাসার মানুষ হয়ে উঠতে পারে না! পাশের থাকলেও কাছের হয় না।
অথচ, অনেকেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একটা ভালোবাসাহীন মানুষের সেবা যত্ন করতে করতে সময় কাটিয়ে দেয়! শুধু অভ্যাসের দোহাই দিয়ে অনেকে সংসারের ডেফিনেশন বোঝাতে চায়! সংসার মানে আসলে কি? সংসার মানে কি কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি টাকার পেছনে ছুটে চলা! সংসার মানে কি রোজ দু’বেলা ভাত রান্না করে, স্বামীর প্লেটে মাছের বড়ো পিস, মুরগির রান তুলে দেওয়া? সংসার মানে কি বাচ্চা উৎপাদন? সংসার মানে কি মধ্যরাতে শরীর বিনিময়ের মহোৎসব? না সংসার মানে আসলে একটা নির্ভরশীলতা!
একজনের খারাপ লাগাতে অন্যজনের কষ্ট হওয়া!
জীবনকে উপভোগ করার নাম সংসার।সংসার মানে জীবনের সব প্রতিকূলতা গুলোকে শেয়ার করা, ক্ষনিকের এই জীবনটাকে উপভোগ করা, ভীষণ মন খারাপের সময় কেউ এসে বলুক ‘ মন খারাপের কিছূ নেই, এটাই জীবন’ ‘মন খারাপ করো না, আমি আছি তো’! সংসার মানে, সমস্ত অপ্রাপ্তির পরও মনে হওয়া, আমার সুখ দুখ ভালো মন্দ শেয়ার করার মতো একজন ব্যক্তিগত মানুষ আছে! আমার একজন খুব কাছের বন্ধু আছে। যার সাথে আমি আমার সকল কিছু শেয়ার করতে পারি। আমার সাথে আলাদা একটা অস্তিত্ব আছে!
অভ্যাস আর দায়বদ্ধতা ভাবতে ভাবতে অনেকেই ভুলে যায়, বিপরীত মানুষটার গুরুত্ব। ভুলে যায় তার মূল্যায়ন। ভুলে যাই জিজ্ঞেস করতে ’তুমি ভালো আছো তো? অভ্যাস ব্যাপারটা মস্তিষ্কে প্রবেশ করানোর পর আমরা আসলে ভুলে যাই, অভ্যাস আর ভালোবাসা এক জিনিস না। আমরা যারা সংসারকে শুধু অভ্যাস বলে চালিয়ে দিই, তারা আসলে নিজেদের চিন্তার গভীরে একটা অসুস্থ চেতনাই ধারণ করছি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, যুগের পর যুগ। ক্ষয় হচ্ছে জীবন গাড়ির ইঞ্জিন থেকে শুরু করে সমস্ত বডি।
ভালোবাসায় অভ্যাস আসবে ঠিকই, তবে অভ্যাস থাকলেই যে ভালোবাসা আসে না, এটাও আমাদের মাথায় সেট করে রাখা উচিত! সংসার মানে আসলে, বিপরীত মানুষটার যত্ন নেওয়া! সে যত্ন নেওয়ার মানুষিকতা যাতে দুজন মানুষের ভেতরই জন্ম নেয়!
শুধু অভ্যাসই না, মাঝে মাঝে একে অন্যের মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করা ‘তুমি ঠিক আছো তো’? অথচ অনেকেই এই অভ্যাসকেই আঁকড়ে থাকে, ভুলে যায় ভালোবাসা, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই অভ্যাসের বশে থাকে। কেউ আগে থেকে জানে না এরকম একটা ভালো থাকার অভ্যাস করে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে। একবার এই অভ্যাসময় জীবনে পা রাখলে বেরুবারও পথ থাকে না কোনো। অনুভূতিগুলোও বদলানো যায় না। শুধু ভালো থাকার অভিনয় করে যেতে হয় আমৃত্যু…….’