
সীমানাহীন শ্বাস
সীমানাহীন শ্বাস
আকাশে পলক ফেলার আগেই,
জলপথে হারিয়ে যাওয়ার আগে—
পৃথিবী নিজে যখন নীরব,
তখন এক চাষী বুনে যায় শস্যের গল্প,
একটি নদী নদীর পেটে গোপনে
নির্বাক ইতিহাস রেখে আসে।
শিলা তোলার আগে পাথর হয় ধীরে,
তবু শিকড় তুলে নেয়—অফুরান, অগাধ।
তারা বলে, ‘মুক্তি কোনো এক দূর অগ্নিতে,
যে আগুনে শেকড় জ্বলে,
যে জলে ভাসে প্রেমের খোঁজ,
কিন্তু সেই জলের নিচে
গুপ্ত থাকে খন্ডিত ভূমি—
যেখানে পৃথিবী ডুবে যায়,
শুধু সীমানা ভেঙে আসে এক নতুন শ্বাস।’
শুধু সীমানা ভেঙে আসে এক নতুন শ্বাস—
এই শ্বাসে আছে অবিরাম অন্ধকার,
আলো ছড়িয়ে যেতে যেতে গন্ধের মতো,
আছে সেই অধিকার—যা চাপা পড়ে ছিল মাটির গভীরে।
প্রতিটি ঢেউয়ের সুরে,
প্রতিটি মানুষের কান্নায়,
আমরা শুনি অদৃশ্য এক কণ্ঠ—
বহু ভাষায়, বহু যন্ত্রণায়,
এক মহান যুদ্ধ—
এটি অন্য কোনো অগ্নির গল্প নয়,
এটি পৃথিবী পেয়ে ওঠার মন্ত্র।
তাদের ইতিহাস মুছে গেলে—
এক গণের সংগ্রামে জন্ম নেয়
অপূর্ব একটা শ্বাস,
যে শ্বাসে মুছে ফেলা হয় সীমান্ত,
যে শ্বাসে উঠে আসে এক মুক্তির আকাশ,
এবং খুঁজে পাওয়া যায় শুধু মানবতার মনুমেন্ট।
আমরা জানি,
ভালবাসা কখনো মাপে না,
মুক্তি কখনো দেয় না হারানোর ভয়।
তবুও—প্রতিটি শ্বাসের ভেতরে,
আমরা একই ঘ্রাণ পাই—
একই বীজের যন্ত্রণা
একই মাটি থেকে উঠে আসে নতুন পৃথিবী।
এই পৃথিবী যেখানে সীমানা নেই,
কেবল অদৃশ্য শ্বাসের শাখায়
মানুষের আত্মা বেড়ে ওঠে—
আমরা তখন একে অপরকে গলাধঃকরণ করি,
কেবল বেঁচে থাকার কারণে নয়,
বরং পরস্পরের জন্য,
এক সীমানাহীন সংগ্রামে,
এক সার্বজনীন শ্বাসের মধ্যে।