
সুরমার সুরে আত্মার আরশ
সুরমার সুরে আত্মার আরশ
সুরমা তীরে বসে আছি—
নদীর কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে এক অনন্ত ফতোয়া,
যেখানে ঢেউ নয়, পলিমাটি উচ্চারণ করে
অদৃশ্য কোনো আত্মার ফিসফাস।
হাসন রাজার বাঁশি
তৃতীয় পাখির ডাকে মিশে যায়—
যার ডানা নেই, তবু সে ডুবে থাকে
বেহেশতি কোনো পুকুরে।
ভেসে আসে গানে—
“আল্লারে পাই না খুঁজে, ঘর আমার মাটি!”
রাধারমণ দত্তের বিরহপদ
এখন আর শুধু স্মৃতি নয়—
তা এক টাইম ট্রান্সফিউশন,
যেখানে আত্মা হয়ে ওঠে নির্বাসিত উচ্চারণ,
কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায়।
শাহ আবদুল করিমের সুর
টরন্টোর শীতার্ত আকাশে ভেসে ওঠে মাইক্রোফোনে—
ইউটিউবের অদৃশ্য দরিয়ায় গেয়ে যায়:
“বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে।”
শায়খে কাতিয়া ও গাজী নগরীর চোখে
জ্যামিতিক আলো জ্বলে—
তাফসিরের অনুচ্ছেদে তাঁরা খনন করেন
কাশফের ব্যাকরণ,
যা কবিতা নয়—
ওহির এক প্রতিস্বর।
ভূগোলপাঠে সুমন কুমার দাস
খোঁজেন ধানের শরীরে লেখা দিনপঞ্জি—
মুঠোয় তুলে আনেন গানের মাটি,
যেখান থেকে উঠে আসে
উজ্জ্বল মেহেদীর গোপন প্রতিবেদন।
মামুন সুলতানের কাব্যে
শব্দ নয়— হেঁটে যায় এক সূর্যাহত ঈগল,
যার ছায়া পড়ে টিলা, বাউল
ও বাইতুল্লাহর মাঝখানে।
এখানে কেউ ঠিকানা জানে না—
তবু সুর, স্মৃতি ও শেকড়ের মিলনে
গড়ে ওঠে এক অন্তহীন মানচিত্র;
যেখানে স্বদেশ ও প্রবাস
দুটি লেন্সে বিভক্ত,
তবু কবিতাই পারে—
তাদের এক ক্যামেরায়
ধরে রাখতে
আত্মার ঘ্রাণ মিশ্রিত এক চিরন্তন আয়াত…