
রক্তপাতের পরিমিতি
মৃতদেহ আর সংখ্যার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে এক গণিতে রক্তচাপ—
যার ক্যালকুলেটরে অশ্রুর ঘনত্ব, পেছনের বোতামে চাপা পড়ে শবযাত্রার ছায়াপথ।
তার ছায়া পড়ে মানচিত্রে, অথচ ছায়ার নাগরিকত্ব নেই—
পৃথিবীর সীমান্তরেখায় রোদ যেন বহিরাগত, হিমায়িত আলোয় ঠোঁট নড়ে না মানবতার।
পাক-ভারত সীমান্ত এক চলন্ত কাঁটাতার, যেটা কেবল মানুষ নয়—
ছিন্ন করে প্রেমের ফিতেয় বাঁধা স্মৃতি, শিশিরে লেগে থাকা গোপন গানও হয়ে যায় বুলেটধ্বনি।
মায়ের স্তনের দুধ, নাম না-জানা শৈশব, ওড়নার চিত্রলিপিও ছিঁড়ে ফেলে—
যেন এক ব্যালিস্টিক সূরা, মাতৃত্বের স্তব পড়তে পড়তে শব্দহীন হয়ে যায় আকাশ।
যুদ্ধ এখন এক ব্র্যান্ডেড গ্যালারী, ব্যালিস্টিক ম্যানেকুইনের মুখে রং মেখে হাসে—
তার ঠোঁটে বারুদের গ্লস, চোখে ডিজাইনার ধ্বংস, জ্বলন্ত শহর পরে যায় ‘সিজনস কালেকশন’ এ।
গণমাধ্যমে শান্তি কেবল মাইনাসের প্রচ্ছদ—শূন্যতা ছাপা হয় পরিসংখ্যানে—
পত্রিকার হরফে লুকিয়ে থাকে কফিনের ফাঁকফোকর, মৃত্যুর বিপণন হয় ছাপার জ্যামিতিতে।
প্রতিটি বিজয়ের ছায়া মাপে—কত পঙ্ক্তি অনাথ হলো, আর কত হৃদয় শব্দহীন লাশ বয়ে বেড়ায় চিরকাল।
কবিতা তখন ছিন্ন শির—অভিমানী ঈশ্বরের হাতে ধরা লাল রুমাল, যেখানে কেবল পাণ্ডুলিপি নয়, মনুষ্যত্বও রক্তাক্ত।