
রবীন্দ্রনাথের কাছে: মানুষের ডাক
রবীন্দ্রনাথের কাছে: মানুষের ডাক
মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী
(কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এঁর জন্মদিনে নিবেদিত)
নরম জলজ রোদে ঝুলে আছে এক ভাষাহীন মুখ,
যেখানে পদ্ম-সমস্যা নয়, জন্ম নিচ্ছে শোকের দ্রাঘিমা।
ছেঁড়া কাঁথার মতো কাঁপে কবিতার মানচিত্র,
রবীন্দ্র, তুমিই শুধু পারো মলিন পঙ্ক্তিকে বাঁচাতে।
পিঁপড়েরা হাঁটে মৌন ক্রমে সীমান্তরেখা বেয়ে,
প্রতিটি লাশ একেকটা অসমাপ্ত কাব্যের খসড়া
হাওরের ঢেউয়ে ঘুমিয়ে থাকে এক ক্লান্ত নিঃশ্বাস,
আসলে— জীবনের প্রেমটাই হল ক্ষণিকের প্রতিচ্ছবি।
নদী এখন আর প্রেমিকাকে ডাকে না,
তার জল কাঁদে, যেন বাউলের অবরুদ্ধ গলা।
পাখিরা উড়ে না আর, তারা শব্দহীন বর্ণমালায় বন্দী।
যুদ্ধবিমানের তাণ্ডবে ছিন্ন হয় গানের ডানা,
আকাশ এখন ভারী—
মৃত উচ্চারণে জমে থাকা কান্নার গুহা,
মিনারে থেমে থাকে ভয়,
ঘণ্টাধ্বনি চাপা পড়ে ধাতব মন্ত্রে।
আর রক্ত?
সে ভাষাহীন,
ধর্মান্তরহীন—
তার লাল সর্বত্র সমান,
একটি রং,
যা মানুষ হবার প্রথম উচ্চারণ।
কাঁটাতারের কিনারে এক শিশু
খেলনার গরু দিয়ে কবিতা বানাতে চায়
তুমি এসো, রবীন্দ্র—
তাকে শেখাও, কেমন করে শব্দ দিয়ে গড়ে ওঠে মানুষ।
আর কাগজের পাখি হয়ে
যুদ্ধবাজদের শোনাও
ড্রোনে ধরা আগুন নয়,
চেনা হোক সেই মুখ,
যার চোখে জ্বলে প্রেম, প্রতিবাদ ও পবিত্র প্রশ্নবোধ।
কেবল দরকার—
একটি নতুন ভোর, যেখানে
ভালোবাসা, স্মৃতি ও প্রতিবাদ
হয়ে ওঠে মানুষের একমাত্র পরিচয়
যেখানে রক্ত নয়, উচ্চারণে লেখা হয় পথ;
আর প্রতিটি হৃদয়—একটি অবিস্মরণীয় কবিতা…।